Alapon

ভাষা সংস্কৃতির খেল

ইদানিং “Cultural Sharing” এত বেশি
বেড়েছে যে গোটা বিশ্ব মিলে হয়ত একটা “নিউ জগাখিচুড়ি সংস্কৃতি” জন্ম দেবে।
ইন্ডিয়ান সিরিয়াল নিয়ে আপনার হয়ত দুঃখের শেষ নাই, কিন্তু মজাও পাবেন যখন
শুনতে পারবেন যে, পাকিস্তানী সিরিয়ালও ভারতে কম জনপ্রিয় নয়। আর ভারতের
সিনেমায় পাকিস্তানীদের প্রভাব দিন দিনই বেড়ে চলেছে। এখানেও একটা লক্ষনীয়
বিষয় হল, ভারতে কিন্তু মুসলিম পুরুষদের যে হারে সিনেমায় দেখা যায়, নারীদের
সে হারে দেখা যায় না । এটাকে আমি বলতে চাই “ভারতীয় মুসলিম কনজারভেটিভনেস” !

এখনকার
মতো মিশরের ভাষা আগে আরবী ছিলো না । মিশরের ভাষা আরবী হয়ে ওঠে সপ্তম
শতাব্দির দিকে ।ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে বাংলা ভাষার উৎপত্তিকাল
খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী। সেদিক থেকে মিশরীয় আরবী ভাষার জন্ম বাংলা ভাষার
জন্মের সমসাময়িক । ইসলামী সংস্কৃতিকে এরা এত বেশি গ্রহণ করেছিল বা গ্রহন
করতে বাধ্য হয়েছিল যে নিজেদের ভাষা পর্যন্ত চেঞ্জ করে ফেলেছিলো । এরা যে
শুধু গ্রহন করতে নয় করাতেও ওস্তাদ তার প্রমান পাই মধ্য আফ্রিকার
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে তাকালে । এই এলাকার লোকেদের ভাষাও আরবী ছিলো না।
কিন্তু এখন আরবী । এটা ইজিপশিয়ান সিনেমার কারবার । সিনেমার “সাংস্কৃতিক
শক্তি” যে কতখানি এটা তার প্রমান। সে একটা এলাকার ভাষা পর্যন্ত চেঞ্জ
পর্যন্ত করে দিতে পারে । অবশ্য আফ্রিকার ভাষা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আরব
লোকেদের চাইতে ইউরোপীয় উপনিবেশগুলোর প্রভাব সবচাইতে বেশি । খালি ইংলিশ আর
ইংলিশ !! উপনিবেশিক শাসন কি জিনিস ! তবে আমার মনে হয় উপনিবেশিক শাসন
আফ্রিকার জন্য ভালোই ছিলো ।

সিনেমা
যে কী চীজ তার প্রমাণ আরো আছে । লক্ষ করবেন, আমাদের দাদাদের দেশ ভারত
কিন্তু বলিউড দিয়ে গোটা এশিয়া ছেয়ে ফেলেছে । ফলে হঠাৎ যদি দুবাইয়ের রাস্তায়
হাঁটতে হাঁটতে কোন নেটিভ আরব লোকের মুখে ফ্লুয়েন্ট হিন্দি শুনতে পান,
আপনার কিন্তু মোটেও আশ্চর্য হওয়া উচিৎ হবে না । ইহাই সিনেমা ! শুধু এশিয়ার
কথাইবা কেন বলি । সুদূর আমেরিকার এবং বিশ্বের সবচাইতে শক্তিধর প্রেসিডেন্ট
বারাক ওবামা যখন ইন্ডিয়ার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির কায়দা হিসেবে ইন্ডিয়ার
সিনেমাকে গ্রহন করেন এবং ইন্ডিয়ায় এসে শাহরুখ খানের সামনে তারই সিনেমার
দু’ছত্র গেয়ে শোনান তখন আমরা বলই, “ইয়ে তো কামাল কী বাত হ্যায়, ক্যা
“সিনেমাটিক পলিটিক্স” !

পঠিত : ৫৪১০ বার

মন্তব্য: ০