Alapon

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কী আসন্ন?

২০১৩ সাল থেকে শুনছি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে,এবং সিরিয়া থেকেই শুরু হবে।

বিশ্বযুদ্ধ শুরু এই সময়ে এত সোজা ব্যাপার না,যখন দুনিয়ার ইকোনমি ওভারহেলমিংলি গ্লোবালাইজড।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এখন লাইগা গেলে সব কয়টা মেজর সুপারপাওয়ার পথের ফকির হইয়া যাওয়ার চান্স আছে।এর মধ্যে সবার আগে ফকির হবে রাশিয়া আর ব্রিটেন,আমেরিকা তার দুই ইকোনমিক পিলার জাপান আর জার্মানীর উপর ভর দিয়া অপেক্ষাকৃত লম্বা সময় সারভাইভ করতে পারবে।
কিন্তু কথা হইলো,এইসব জিনিস আমি আপনি যা জানি,তার চাইতে অনেক বেশি জানে বিশ্বমোড়লেরা।
চায়না তার ইকোনমিক গ্রোথকে কোন প্রকার রিস্কে ফেলতে নারাজ ততক্ষন পর্যন্ত,যতক্ষণ না রাশিয়া আমেরিকার সাথে পাওয়ার রেইস কইরা কোমরের ব্যথায় চাইনিজ ইউয়ানের মালিশ না চাইয়া বসে,এবং আমেরিকান ডলারের গ্লোবাল সুপ্রিমেসি চাইনিজদের কন্ট্রোলে চইলা আসে।
সিরিয়ায় যা হইতেসে তা একটা মিয়ার প্রক্সি ওয়ার না হইলেও একটা ওয়ার্ল্ড ওয়ার লাগানোর মত ব্যাপার না।
নেক্সট ওয়ার্ল্ড ওয়ারের আগে কি ধরনের আলামত দেখা যাবে আমি আন্দাজ করার চেষ্টা করসি।
এক নম্বর আলামত হবে,ডলারের সুপ্রিমেসি চরম রিস্কে পইড়া যাবে,স্পেশালি এশিয়া ও আফ্রিকা-লাতিন আমেরিকার দেশগুলা ডলারকে রিফিউজ করতে থাকবে।
এই সময়ের মধ্যে ইউরোপে বেশিরভাগ দেশে কট্টর ডানপন্থী সরকার আমদানি করা হবে যারা ইকোনমিক্যাল এপ্রোচে কনজারভেটিভ হবে।ফলে,ট্রেড ওয়ার জোরদার হবে এবং একটা সময়ে গিয়া বড় মাছগুলার ইকোনমি পারস্পরিক নির্ভরশীলতা থেকে অনেকটা বাইর হয়ে আসবে।

দুই নম্বর আলামত হইলো,জাপান-জার্মানীর
ব্যাপকভাবে অস্ত্রধারন।এই দুই দেশ হাতে অস্ত্র না নেয়া তক নেক্সট ওয়ার্ল্ড ওয়ার হবে না।

তিন নম্বর আলামত হইলো,চায়না আর রাশিয়ার কম্বাইন্ড গোল্ড রিজার্ভ আমেরিকা আর ইউরোপের কম্বাইন্ড গোল্ড রিজার্ভের চাইতে অন্তত দেড়গুন হওয়া।রাশিয়া না পারলেও চায়না এইটা ঠিকই পারবে।সাথে ব্রাজিল যোগ দেয়ার একটা বড় ধরনের চান্স আছে।

চাইর নাম্বার আলামত হবে,দুনিয়াভর রথশ্চাইল্ড ব্যাংকগুলার প্রতিদ্বন্দী হিসাবে আরেক শ্রেণীর ব্যাংক জায়ান্টের আবির্ভাব ঘটবে,এইগুলা মোস্টলি চায়না-রাশান জয়েন্ট ভেঞ্চার হইতে পারে।
ওয়াটারলুর যুদ্ধের পর থেকে আজ পর্যন্ত দুনিয়ার বুকে এমন কোন যুদ্ধ হয় নাই যেইখানে রথশ্চাইল্ড ব্যাংকাররা উভয় পক্ষেই ইনভেস্ট না করসে।যুদ্ধ শেষ হইলে যেই পক্ষ জিতসে,তারে সাথে নিয়া হারু পার্টির ঘাড়টা সুন্দরমত চাইপা ধরসে,যুদ্ধের খরচ সুদে আসলে আদায় কইরা নিসে।

কেউ যদি ভাইবা থাকেন সিরিয়া নিয়া রাশিয়া-চায়না ইউএসএর সাথে বিশ্বযুদ্ধ লাগায়ে দেবে,তাইলে আপনি ভুল করতেসেন।

চায়না নিজের মিলিটারিরে মডার্নাইজ করতে আরো প্রায় দশ বছর সময় নেবে।এই সময় সে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং কোয়ান্টাম টেকনোলজিতে নিজেকে যথাসম্ভব আপগ্রেড করবে,গোল্ড রিজার্ভ বাড়াবে,ডলারকে অন্তত আফ্রিকা থেকে তাড়াবে এবং নিজস্ব ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট সিস্টেম দাড় করাবে।

কার্ল ফিলিপ গটফ্রিড ভন ক্লসউইটজকে কোট করতেসি।
"War is thus an act of force to compel our enemy to do our will."
-On War,Howard Michael,1986,Princeton University Press

একটা বিশ্বযুদ্ধ মানে দুইটা পাহাড়ি ছাগলের শিং ঠোকাঠুকি না।
বিশ্বযুদ্ধের উদ্দেশ্য হয় বিশ্বব্যবস্থা পরিবর্তন করা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হইসিল পৃথিবী থেকে উসমানী সালতানাত আর হাবসবুর্গ সাম্রাজ্য বিদায় কইরা,জার্মানদের সাবমিশনে বাধ্য কইরা পৃথিবীর সমগ্র জ্বালানি সম্পদের দখল নিশ্চিন্তে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে ভাগজোগ কইরা নেয়া।

সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ-ফ্রেঞ্চ অক্ষরে ইটালো-জার্মান অক্ষ দিয়া রিপ্লেস কইরা একইভাবে দুনিয়ার ক্ষমতার দখল নেয়া।এইখানে তারা দুইটা ফোর্সকে ইগনোর কইরা গেসিল,ইউএস আর রাশিয়া।কিন্তু এই যুদ্ধ এত বেশি ব্যয়বহুল ছিল যে জানমালের খরচ সামলাইতে গিয়া ইউরোপ টোটালি এক্সহস্টেড হইয়া পড়ে।
দেখা গেল,শেষমেশ এই দুইটা ফোর্স দুনিয়ার দখল নেয়,এবং নিজেদের মত একটা ওয়ার্ল্ড অর্ডার কায়েম করে।

পরের ওয়ার্ল্ড ওয়ারটাও একটা নয়া অর্ডার কায়েমের জন্য হবে এবং এই অর্ডার কায়েমের কন্ডিশনগুলা হাজির না হওয়া তক এইটা শুরু হবে না।


পঠিত : ১১৫৩ বার

মন্তব্য: ০