Alapon

অধিকার আদায়ে হতে হবে আর সোচ্চার

 
অধিকার আদায়ে হতে হবে আর সোচ্চার:

 
 
রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার ও নূর হোসেনরা কখনও মরেনা। তারা ফিরে আসে প্রতিটা যুগেযুগে। তারা একটি বিপ্লবের নাম। একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করার নাম। তারা জেগে থাকে লক্ষ- কোটি যুবকের হৃদয়ের মনি কুঠরে। যুগেযুগে এসে এক একটি বিপ্লব সফল করে চির স্মরণীয়  হয়ে থাকে মানুষের অন্তরে। তাদের কাছে জীবনের কোনো মূল্য নেই। তাদের কাছে যা আছে তাহল শুধু যুগযুগ ধরে চির স্মরণীয় হয়ে থাকার স্পৃহা। তারা চায় মানুষের চেতনায় জীবিত হয়ে থাকতে। তাদের থেকে যুবকরা প্রাণ শক্তি পায় অপশক্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুঁখে দাড়াবার। 

১৯৫২ সালে যেমন পাকিস্তানি  নরপিশাচদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুঁখে দাড়িয়েছিল তরুণরা।  যাদের ডাকে সাড়াদিয়ে বৈষম্যের প্রতিবাদ করেছিল এদেশের যুব সমাজ। দাবী আদায়ে সোচ্চার হয়ে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত,  জব্বার সহ নাম না জানা অনেক টগবগে তাজা প্রাণ। ঢাকার রাজপথ রঙ্গীন হয়েছিল তাদের তাজা খুনে। তারা দমে যায়নি। কামানের গুলা-বারুদ দিয়ে তাদের পিচপা হটানো যায় নি। তারা তাদের দাবি আদায় করেছে জীবনের বিনিময়ে। তাইতো আজকে স্বরণীয় হয়ে আছে লক্ষ-কোটি যুবকের চেতনার মনিকুঠরে। 

রফিক, সালাম, জব্বার, বরকতেরা ১৯৫২ সালেই থেমে যায়নি, সমাজে যখনি বৈষম্য দেখা দিয়েছে তখনি তারা নতুন বিপ্লবের ডাক দিয়েছে। ১৯৭১ সালে এসেছিল ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তেমিশে। লক্ষ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করতে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা লড়েছিল বৈষম্য দুরকরার জন্য, শোষণ মুক্ত একটি দেশ উপহার দেওয়ার জন্য।  

তারা সেদিন তাদের জীবনের মায়া করেনি।  জীবন বাজি রেখে একটি বৈষম্য মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। সেই জীবন্ত আত্মাগুলো ৫২ কিংবা ৭১ এ থেমে যায়নি। যখনি সমাজে অসংগতি দেখা দিয়েছে তারা আবার ফিরে এসেছে নতুন নামে নতুন উদ্যমে শোষন মুক্ত, বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে। তারা ফিরে এসেছিল আবার ১৯৮৭ সালে নূর হোসেনের আত্মায় মিশে। কোন রক্তচক্ষুকে ভয় করেনি যৌক্তিক দাবী আদায়ে জনতার পক্ষে সোচ্চার হয়েছিল। জীবন বিলিয়ে দিয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।  স্মরণীয়  হয়ে থাকবে যুগযুগ ধরে।

আজ ২০১৮ সালে এসে সমাজের বৈষম্য দুরকরার জন্য নুর হোসেন, রফিক, জব্বার, সালাম ও বরকত সহ লক্ষ শহীদের আত্মারা ফিরে এসেছে। তার সমাজের যৌক্তিক দাবী বৈষম্যের সংস্কার চায়। গত ৮ এপ্রিল ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটা ছবিতে দেখা গেছে একজন যুবক রাস্তায় পুলিশের গুলির সামনে বুকপেতে দিয়ে দাড়িয়ে আছে। অপর প্রান্তথেকে পুলিশ গুলি ছুড়ছে কিন্তু ঐ যুবকটি পিছু হটছেনা। এরাইতো নূর হোসেনের আত্মা এরাইতো রফিক, জব্বার, সালাম, বরকতের আত্মা যার কখনো দাবি আদায়ে পিচপা হয় না।

আজকের এই মেধাবী বেকার যুবকদের যে দাবী, এটাতো  আজকের নতুন কোন দাবী নয়। এই দাবীটা ১৯৭২ সালের দাবী।  এই দাবীটা বঙ্গবন্ধুর দাবী। ১৯৭২ সালের ১০ শে জানুয়ারী বাঙ্গালী জাতির জনক জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করেছিলেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন স্বাধীনতার স্বপ্ন সেদিনই বাস্তবায়িত হবে। স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ আমরা সেদিনই পাব যেদিন দেশে কোন শিক্ষিত বেকার থাকবে না। 

তবে আজকে কেন ২৫ লক্ষ বেকারের দিকে লক্ষ করা হচ্ছে না।  তাদের কেনো আজকে রাস্তায় পুলিশের গুলি খেতে হচ্ছে?  এসএসসি পাশ পুলিশ কিভাবে অনার্স/ মাস্টার্স পাশ ছাত্র-ছাত্রীর গায়ে হাত তোলে দুদিন পরে এই ছাত্র-ছাত্রীরাই তাদের কর্মকর্তা হবে। জাতি  এই লজ্জা লুকাবে কোথায়?

 
মোঃ আশরাফুল ইসলাম

শিক্ষার্থী: মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 

পঠিত : ৬৮৫ বার

মন্তব্য: ০