Alapon

আপনি জানেন কি? আপনার চারটি জন্মদিন!!

মুল বিষয়ে আলাপ করার আগে অন্য আরেকটা বিষয়ে একটু চোখ বুলিয়ে জেনে নেয়া যাক, যাতে করে মুল বিষয়টি বুঝতে সহজ হয়। তাহলে চলুন জেনে নিই "৫১ এবং একান্নবর্তীর কী সম্পর্ক?" 

অভিধানে এরা দরজার প্রতিবেশি; শুধু কী তাই? নাহ! হলো না। ঘাটাঘাটিতেই অকস্মাৎ পাওয়া গেল এক ঘনিষ্ট সমীকরণ। একান্নবর্তী মানে একই অন্ন ভুক্ত যারা। আর ৫১ পরে সাতটি শুন্য দিলে হবে ৫১,০০,০০,০০০ মানে (একান্ন কোটি) বর্গ কিঃমিঃ বিস্তৃত সবুজ-সতেজ (ভূমি এবং সুনীল সাগরসহ) এই বসুন্ধরা । আদতে এই আদিগন্ত বিস্তৃত প্রাণ-প্রাচুর্য্যরে এই পৃথিবীতো এক একন্নবর্তী পরিবারের মতোই বদ কিসিমের লোকেরাই করেছে এতে বিভেদের বর্ডার।

১৯৭১ এ, বাংলাদেশের জন্ম লগ্নে এর অধিবাসী ছিল সাড়ে ৭ কোটি। কী চমৎকার ঐকতান ! আমার দেশের চেয়ে আয়তনে ১০০০ গুন বড় এই বসুমতীর (শুধু স্থলভাগের হিসেবে)  বুকে এখন প্রায় সাড়ে ৭ শত কোটি মানুষের আবাস। 
এদের প্রায় ৮৬% হচ্ছেন ধার্মিক। প্রধান ধর্মগুলির মতে জগতের প্রথম মানুষ কুরআনের দৃষ্টি হযরত আদম আঃ,বাইবেল ও তাওরাতের দৃষ্টিতে অ্যাডাম আর বেদ-মনুসংহিতায় আছে মনুর নাম। মোটামুটি তার জন্ম ধরা হয় ১০ হাজার বছর আগে। কুরআন হাদিসের বর্ণনা , আদমের দেহ গড়েছিলেন ফেরেশতারা মাটি দিয়ে আর মহান আল্লাহ সেই দেহ কুঠুরিতে রুহ ফুকে দিয়েছিলেন। সেই ১০,০০০ বছর আগে পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায়। সবার চোখের সামনেই সেই জড় কাঠামো নড়ে উঠে মানবসৃষ্টির মহোত্তম সুচনা করেছিলেন। নিশ্চয়ই ফেরেশতাকুল সেই পরমাশ্চর্য্য বিষয় অবলোকনে খুবই আনন্দ করেছিলেন। আর সেটিই জগতের প্রথম জন্মদিন উৎসব।
 
বিশেষজ্ঞদের মতে, আদম থেকে এ পর্যন্ত জন্ম নেয়া আদমীর সংখ্যা প্রায় দশ হাজার কোটি। আদমের সৃষ্টি, তার পাজর থেকে মা হাওয়ার সৃষ্টি (পৃথিবীর প্রথম ক্লোন) এবং পিতাহীন ঈসা আঃ এর জন্মকে ব্যতিক্রম ধরলে বাকী সব মানুষের জন্মের নিয়ম একই। আমার মনে হয় ; মানুষের জন্মদিন আসলে চারটি ।

১) যেদিন পরম প্রভূ আত্মা তৈরী করেছিলেন; তাই তার সাথেই হওয়া উচিত আমাদের আসল সম্পর্ক।
২) যেদিন মায়ের গর্ভে আমাদের ছোট্ট দেহে আত্মার সংযোগ হয়েছিল;তাই পিতামাতাই হবে আমাদের সেবার সবচেয়ে বেশি অধিকারী।
৩) যেদিন আমরা এ জগতে পদার্পন করলাম; তাই এ জগতে প্রভূ প্রদত্ত খেলাফতের দায়িত্ব রাসুল সাঃ কে অনুকরণ করে আমরা পালন করবো।
৪) যেদিন উত্থান দিবসে আত্মা-দেহ আবার একত্র হবে; আমরা চুড়ান্ত জয় পরাজয়ের সার্টিফিকেট পাব। 

১,২ ও ৪ নাম্বার জন্মদিনের সন তারিখ আমরা কেউ জানি না ; তাই সবাই ৩ নং অর্থাৎ পৃথিবীতে আসার দিনটিকেই জন্মদিন হিসেবে পালন করে (আসলে এই মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়ার দিনটি এতই গুরুত্বপূর্ণ হলে আল্লাহপাকের একান্ত আপন আদম ও হাওয়া আঃ হাজার বৎসর বাচাঁর পরও এই দিনটি নিজেরা এমনকি দুনিয়ার সব মানুষ তাদের সন্তান হিসেবে এটি পালন করতে পারেনি কারণ তারাতো কোন মায়ের গর্ভেই জন্ম নেননি।)। তবে সেই সাথে বাকীগুলোও স্মরণীয়। বিশেষ করে ১,২ ও ৩ নং জন্মদিনে আমাদের করার কিছুই ছিল না। 
কিন্তু ৪র্থ জন্মদিনের চুড়ান্ত সফলতার জন্যতো আমরা অনেক কিছুই করতে পারি; নয় কী ? বরং সর্বশেষ বা হাশরের ময়দানের জন্মদিনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এরই ভিত্তিতে নির্ণিত হবে চুরান্ত সাফল্য ও ব্যর্থতা।
 
কবির কবিতায় আমাদের সবার সে শিক্ষার কথাই বলা আছে; 
প্রথম যেদিন তুমি এসেছিলে ভবে/ কেদেঁছিলে তুমি একা হেঁসেছিল সবে ।
এমন জীবন তুমি করিবে গঠন/ মরণে হাসিঁবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন।।

পঠিত : ৭৩০ বার

মন্তব্য: ০