Alapon

রাজনীতির নানা খেলা

বুঝলেন, এদের না মাথায় লাখ খানেক আইডিয়া কিলবিল করে। হোক তা যতই উল্টাপাল্টা।


সকালে ঘুম ভেঙ্গে চোখ খোলার আগে এরা চিন্তা করে কিভাবে বিরোধী দলগুলোকে নাকানি চুবানি খাওয়ানো যায়। কোন কথা বললে শেখ হাসিনার এটেনশান পাওয়া যায়। পদ বাগানো যায়, পরিশোধ বিহীন ব্যাংকের লোণ পাওয়া যায়, নিজেদের নামের সব মামলা খসানো যায়, খুনি হয়ে কারাগার এড়ানো যায়, জোর করে মানুষের সম্পত্তি কেড়ে নেয়া যায়, পায়ের রগ কেটে নেত্রী থাকা যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি.........।


আইন দিয়ে বিরোধি দলকে কাত করতে সদা ব্যস্ত এই দলটি নিজেদের বেলায় এসে আইন ভুলে যায়। আদালত দিয়ে বিরোধী দলের উপর আইন প্রয়োগকারি এই দলটি নিজেরাই সবচেয়ে বেশী আদালত অবমাননাকারি। প্রশ্ন ফাঁসের মত তারা ওপরের পার্সোনাল ইনফো ফাঁস করাকে অন্যায় ভাবে না, কিন্তু তাদের পাবিলিক কাজ কারবারের ইতিহাস ঘাটলে ওপরের বিরুদ্ধে দেয় ঠুকে মামলা।


এরা বলে চলেছে দেশে যা কিছু ভালো হয়েছে সব হয়েছে আওয়ামী আমলে, বাকি সব আমল ছিল নিকশ কালো অন্ধকার। আওয়ামীরাই কেবল উন্নয়নের সিড়ি, বাকি সব আমলে ছিল কবরের আজাব । যেন তারা বলতে চায় আওয়ামী আমলের হাজার কোটি টাকার রিজার্ভ চুরি, একটার পর একটা ব্যাংক দেউলিয়া, সব হয়েছে দেশের উন্নয়নের খাতিরে, আর বিএনপি এর গত আমলে দুই কোটি টাকার আত্মসাৎ দেশকে ছারখার করে দিয়েছে। জিয়া অরফানেজের টাকা আত্মসাতের মামলা যে সাজানো তা আজ সবাই জানে, সবাই বুঝে, কিন্তু তাতে এদের কিছু আসে যায় না।


বেগম জিয়াকে বন্দি করে লোক চোখের আড়াল করা গেছে সেটাই মুখ্য। ওনাকে কারাগারে পচাও, দরকার হলে স্বাস্থ্য এমনভাবে ডিটরিয়েট করাও যেন উনি আর দুই পায়ে দাঁড়িয়ে রাজনিতিতে ফিরতে না পারে......... এটাই আসল উদ্দেশ্য। বেগম জিয়াকে কারাগারে ঢুকিয়ে এবার ধরেছে তারেক জিয়াকে। দরকার অনুযায়ী তৈরি করেছে জাল নথি । ব্রিটিশ সরকারের নথি জাল করা একটা সিরিয়াস ক্রাইম, সেই রিস্ক পর্যন্ত এরা নিয়েছে। চিন্তা করুন এরা কতটা ডেস্পারেট!


দেশবাসীকে ৪৭ বছরের পুরাতন মুক্তিযুদ্ধ দেখিয়ে তারা তাদের রাজনৈতিক সব প্রতিপক্ষকে, দেশ স্বাধীনের বহুবছর পর জন্ম নেয়া ছেলেপুলেকেও বানিয়ে চলেছে রাজাকার। লতায় পাতায় রাজাকার দেখিয়ে, জামায়াত শিবিরের কানেকশান দেখিয়ে বাকিদের অধিকার আর দাবীর ন্যায্যতা কে হয় তারা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে না হয় কেড়ে নিচ্ছে।


আর বাকীরা? নিজের নামের পাশে যেন রাজাকার তকমাটি না লাগে তার জন্য প্রয়োজনে নিজ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যকে ফাঁসিতে ঝুলতে দিয়েছে। অত্যন্ত ডিফেন্সিভভাবে লড়ে চলেছে যেন তাদের কেউ রাজাকার না ডাকে বা ডাকতে না পারে। দরকার পড়লে নিজ জোটের বিরুদ্ধে গলাবাজি করেছে। আর এসব দেখে আওয়ামী শাহাবাগীরা মুচকি হাসি দিয়েছে। তারা বলেছে বিঙ্গ.... উই গট দেম..।


আরে মূর্খের দল......... রাজাকার তো আওয়ামি-শাহাবাগীদের ট্রাম্প কার্ড। তাদের স্বার্থ সিদ্ধির ট্রাম্প কার্ড। যত বাকিরা নিজেরা নিজেরা বাক বিতন্ডা করেছে তত তাদের রাজাকার কার্ড শক্ত হয়েছে। রাজাকার কার্ডের একটা ফিক্টিশাস লেজেটিমিসি দাড় করিয়েছে।


যাদেরকে আওয়ামি-শাহাবাগিদের পছন্দ হয় না আর হবে না তাদের সবাইকে বনতে হবে রাজাকার। যতদিন তুমি ডিফেন্সিভ হয়ে রাজাকার টার্মকে ভয় পাবে, ততদিন তারা এই কার্ড চালতেই থাকবে। এবার ভয়ের উর্দ্ধে উঠো। ওরা রাজাকার বলার আগেই বলো দেশকে ভালবাসলে, ন্যায্য অধিকার চাইলে যদি রাজাকার হই তো আমরা সবাই রাজাকার, তারা তোমাদের রাজাকার ডাকার আগেই নিজেরা নিজেদের রাজাকার ডাকো। লতাপাতা কেনো, কোন প্রকার জামায়াত শিবির কানেকশানকেই ভয় পেয়ো না, পাত্তা দিও না। ভুলে যেও না তাদের নিজেদের বেয়াই বেয়াইন পর্যন্ত রাজাকার আর মন্ত্রী। তাহলে তোমাদের এত ভয় কেনো?


ভয়ের উর্দ্ধে উঠো, রাজাকার টার্মটাকে ট্রল করে হালকা বানিয়ে ফেলো। এরপর খেলো.........


পঠিত : ১২৯১ বার

মন্তব্য: ০