Alapon

আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?

একদিন হঠাৎ মাথায় আসলো আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে। তখন ক্লাস এইটে পড়ি । রাতে ১২ টার পর ঘুমাতে যাব, তখন এই চিন্তা। সাড়া রাত চিন্তায় ঘুম হয়নি। একটা ভালো অভ্যাস ছিলো। সেটা নিয়মিত কুরআন পড়ার অভ্যাস। সকাল বেলায় যথারীতি কুরআন পড়তে বসলাম। পড়তে বসার দু' এক মিনিটের মধ্যেই সেই চমৎকার ঘটনাটা ঘটলো।

সূরা তীন নজরে আসলো ।
لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ 
আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।
প্রশ্ন হতে পারে ফুল কী মানুষের চাইতে সুন্দর নয়? পাল্টা প্রশ্ন, ফুলের চাইতে সুন্দর মানুষ কি কখনো দেখেননি ?
আমি ভাবলাম, মানুষের চাইতে আর কিছুই কি সুন্দর হতে পারবে না? 
দুনিয়ায় যত কিছুর আস্তিত্ব আছে তার সবকিছুকে আল্লাহর সৃষ্টি ধরে আমি একেবারে মৌলিকভাবে নতুন কিছু তৈরী করবো। তারপর এমন কিছু কল্পনা করতে লাগলাম
১) যা মানুষের মত হবে না,
২) কিন্তু মানুষের চাইতে সুন্দর হবে,
৩) আগেই তৈরী হয়েছে এমন কিছুর সাথে সাদৃশ্য থাকবে না, অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ একটা নতুন এবং মৌলিক সৃষ্টি হবে ।

এবার আপনার পালাঃ আপনি নিজেই উপরের তিন নীতির উপর কয়েক মিনিট চিন্তা করে দেখুন তো এমন কোন কিছু কল্পনা করতে পারেন কিনা? চিন্তা না করে সামনে পড়তে থাকলে আপনি আসল মজাটা পাবেন না।

কল্পনার সীমাবদ্ধতাঃ
মানুষের সব চাইতে বড় শক্তির জায়গা হল কল্পনা। আপনি যা ভাবতে পারেননা, তা আপনি করতেও পারেননা। বাস্তবে না পারলেও কল্পনায় আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন। কিন্তু সেই কল্পনাও সাধারণভাবে আল্লাহর সৃষ্টির চাইতে ভালো কিছু কল্পনাও করতে পারে না ।

এই তিন মূল নীতির উপর ভর করে ভাবতে থাকলাম এমন নতুন কিছু তৈরী করবো যার চোখ হবে আরও সুন্দর, সে আরও বেশি শক্তিশালী হবে, তার বুদ্ধিও বেশি থাকবে...............চিন্তা আর আগায় না। 

কারন চোখ, শক্তি, বুদ্ধি, এগুলো সবই আল্লাহর তৈরী বা আগে থেকেই আছে । শেষ পর্যন্ত মৌলিকভাবে এমন কোন কিছুই কল্পনাও করা গেল না যেটা আল্লাহর তৈরী কোন কিছুর সাথে সাদৃশ্য না রেখে সুন্দর হতে পারে বা অস্তিত্বে আসতে পারে । এমনকি কল্পনার অস্তিত্বে পর্যন্ত আসতে পারে না।

অর্থাৎ আমাদের সবচাইতে বড় শক্তিটাও আল্লাহর সৃষ্টির চাইতে ভালো কোন কিছু কল্পনাও করতে পারে না। তাহলে আল্লাহর সৃষ্টির কথা কিভাবে ভাবা যেতে পারে ?
তারপর আল্লাহর সিজদায় পড়ে গেলাম। 
সেই সিজদা অনেক তৃপ্তির, অনেক আনন্দের.........।

পঠিত : ৬৫৪ বার

মন্তব্য: ০