Alapon

মুঘল ঐতিহ্যের স্মারক 'সাত গম্বুজ মসজিদ'

ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সাত গম্বুজ মসজিদ। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের খুব কাছেই অবস্থিত মসজিদটি। ইতিহাসের পাতা উল্টে জানা যায়, মোগল সুবেদার শায়েস্তা খাঁর আমলে তাঁর পুত্র উমিদ খাঁ মসজিদটি ১৬৮০ সালে নির্মাণ করেন।

মসজিদের সাতটি গম্বুজ থাকার কারণে একে ‘সাত গম্বুজ মসজিদ’ বলা হয়। সাত গম্বুজের মধ্যে রয়েছে তিনটি বড় গম্বুজ ও চারটি ছোট গম্বুজ। এর মিনারের সংখ্যা চারটি।


১৮১৪ সালে স্যার চার্লস ডি 'ওয়াইলি কর্তৃক বুড়িগঙ্গা নদীর পাশে সাত মসজিদের একটি শিল্পকর্ম।

মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৭.৬৮ মিটার এবং প্রস্থ ৮.২৩ মিটার। পশ্চিম দিকের দেয়ালে রয়েছে তিনটি মেহরাব। এ ছাড়া তিনটি খিলান মসজিদের সৌন্দর্য বহুলাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদের ভেতরে চারটি কাতারে প্রায় ৯০ থেকে ১০০ জন মানুষ নামাজ পড়তে পারেন। বর্তমানে নামাজির সংখ্যা বেশি হওয়ায় মসজিদের ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাইরে খোলা জায়গার ওপরে তাঁবু টাঙিয়ে জায়গা বাড়ানো হয়েছে।  


রাতে সাত গম্বুজ মসজিদের অনিন্দ্য রূপ

মসজিদের পশ্চিম দিকে রয়েছে অজুখানা এবং উত্তর-পূর্বকোণে একটি কবরস্থান রয়েছে। সামনে রয়েছে ছোটখাটো একটি উদ্যান। সেখানে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। দূর থেকে উদ্যানসহ মসজিদটি দেখতে অসাধারণ মনে হয়। লালবাগ দূর্গ এবং খাজা আম্বর মসজিদের সঙ্গে এই মসজিদটির অনেকটা মিল রয়েছে। 


ঐতিহাসিক সাত গম্বুজ মসজিদের অভ্যন্তরভাগ

এদিকে মসজিদের রাস্তার অপর পাশে রয়েছে একটি সমাধি। বলা হয়ে থাকে এটি শায়েস্তা খাঁর মেয়ের সমাধি। যদিও এর সত্যতা নিয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই এটি অজানা সমাধি হিসেবে পরিচিত। 

একসময় এই মসজিদ বুড়িগঙ্গার খুব কাছেই অবস্থিত ছিল। কালের বিবর্তনে নদী ভরাট হয়ে এখন মসজিদের চারপাশে বড় বড় অট্টালিকা গড়ে উঠেছে। 


সাত গম্বুজ মসজিদের প্রধান প্রবেশদ্বার

আপনিও একবার এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি দেখে আসতে পারেন। সে জন্য আপনি যেখানেই থাকেন না কেন, প্রথমে আপনাকে আসতে হবে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে। বাসে করে মোহম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে আসা খুব সহজ। খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হবে না। বাসস্ট্যান্ডে নেমে দেখবেন একটি রাস্তা বাঁশবাড়ী হয়ে চলে গেছে শিয়া মসজিদের দিকে। বাঁশবাড়ীর রাস্তায় পা ফেলতেই দেখবেন রাস্তার বাম পাশে দাঁড়িয়ে আছে লাল রঙের শত বছরের পুরোনো মসজিদটি। পবিত্র রোজার মাসে সময় করে দেখে আসুন মসজিদটি। 

পঠিত : ৭৮৮ বার

মন্তব্য: ০