Alapon

নৌকা বাঁচাতে মাঠে নেমেছে আওয়ামী আদালত লীগ

জাতীয় নির্বাচনের বছর। এখন ভুল করা চলবে না। তাই নৌকা বাঁচাতে হাসিনা মাঠে নামিয়েছে আওয়ামী আদালত লীগ। বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের ভোট উঠে গেছে বহুদিন হয়েছে। এটা দেশের মানুষ যেমন জানে তার চাইতেও বেশি জানে হাসিনা।

তাই সে আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে জিতে নিয়েছিল। এবার সে ধরণের কিছু করতে রাজি নয়। কারণ তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের দাবী আরো জোরালো হবে। আবার সুষ্ঠু নির্বাচন করে হেরে যেতেও রাজি নয় আওয়ামীলীগ। কারণ  এটাও প্রভাব ফেলবে জাতীয় নির্বাচনে। এই নিয়ে উভয় সংকটে আছে আওয়ামীলীগ। 

আওয়ামীলীগকে এই কঠিন অবস্থা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে আওয়ামী আদালত লীগ। বিচার ব্যবস্থা বহু আগেই হাসিনার পদানত হয়েছে। এবার নগ্নভাবে নৌকা রক্ষায় তারা এগিয়ে  এসেছে। মীমাংসিত বিষয়ে রিট করে গাজীপুরের নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। 

সরকারি দলের হেরে যাওয়ার আশঙ্কার পটভূমিতে তফসিল ঘোষণার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নাটকীয়ভাবে স্থগিত হয়েছিল। চার মাসের ব্যবধানে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। উভয় ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে রিট চ্যালেঞ্জে শিথিল মনোভাব প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। কারণ নির্বাচন কমিশন ও আদালত প্রত্যেকেই আসলে আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনে পরিণত হয়েছে।

খুলনায় যদিও নির্বাচনী প্রচারণা জমজমাট, কিন্তু গাজীপুরের নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে পর্যবেক্ষকদের অনেকে আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রস্তাবিত চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিটি নির্বাচনের ওপর একটা কালো ছায়া হিসেবে দেখতে পারেন।

গাজীপুরের নির্বাচন বন্ধে রিট আবেদনকারী এ বি এম আজহারুল ইসলাম পারিবারিক ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। আর গতকালই তিনি এই রিটটি করেন। রিট নিয়ে তিনি ব্যাখ্যাও দিতে রাজি নন। তার বক্তব্য হচ্ছে, ‘দরখাস্তে কোথায় কী, সব আইনি লেখা হয়েছে!’

যে বিষয় নিয়ে রিট হয়ে তা মীমাংসিত। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সাভার ও গাজীপুরের প্রশাসন ওই রিট আবেদনকারীর তোলা প্রশ্ন সুরাহা করতে সব রকম প্রশাসনিক পদক্ষেপই নিয়েছিল। সাভার ও গাজীপুরের জেলা ও সদর থানা প্রশাসনকে দিয়ে গণশুনানি করেও এর নিষ্পত্তি করে দেয়। এমনকি তফসিল ঘোষণার এক মাস আগেও স্থানীয় সরকার বিভাগ আদালতে রিটের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বলে সন্তুষ্টিও দেখিয়েছে।

আজহারুল ইসলামের কাছে প্রশ্ন ছিল, আপনি নির্বাচন বন্ধ না চাইলে তাহলে কী চাচ্ছেন? ৫৮ বছর (ভোটার তালিকা অনুযায়ী) বয়সী আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার একটিই দাবি, দক্ষিণ বাড়ইবাড়ি, ডোমনা, শিবরামপুর, পশ্চিম পানিশাইল, দক্ষিণ পানিশাইল ও ডোমনাগ-এই ছয়টি মৌজা গাজীপুরে নয়, সাভারে থাকুক।’ (প্রথম আলো)

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, নিষ্পত্তি হওয়া একটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই স্থগিত হয়ে গেছে গাজীপুর সিটি নির্বাচন। যদিও আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ইতিমধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে ফেলেছেন। মূল বিষয় হলো সরকারের নিজস্ব মূল্যায়নও হচ্ছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা কম।

আবার জিততে গিয়ে কেন্দ্র দখল করলেও ইমেজের ক্ষতি। আর এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতিবাচক কোনো ফলাফল দেখতে চায় না ক্ষমতাসীন দল। ফলে স্থগিত হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনের ফল নিয়ে কোন ঝুঁকি রইলো না। 

পঠিত : ৬৭৭ বার

মন্তব্য: ০