Alapon

ছাত্রাবস্থায় বিয়ে ও একটি পর্যালোচনা

বর্তমানে চাকরি ছাড়া আমাদের সমাজের কোন বাবাই তাঁর মেয়েকে আপনার সাথে বিয়ে দিতে চাইবে না।আর চাকরি ছাড়া আপনার পরিবারও আপনাকে বিয়ে করাবে না।আপনিও হয়তো ছাত্রাবস্থায় বিয়ে করতে চাইবেন না। বলবেন-"আগে নিজের পায়ে দাঁড়াই।" আচ্ছা তাহলে কি এতদিন আপনি অন্যের পায়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন? উত্তর নিশ্চয় -না।
আপনি বলতে চাচ্ছেন,চাকরি বাকরি কিছু একটা হোক। তারপর বিয়ে।

আপনি এখন ছাত্র।আপনার চাকরি নেই।ঘরে আপনার বউ আছে।তখন কি আপনি চাইবেন না যে,আপনার ভাল একটা ক্যারিয়ার হোক।বিয়েটা এখানে কোন প্রতিবন্ধক না।বরং আপনার শিক্ষাঙ্গনের উন্মুক্ত পরিবেশটা আপনার জন্য প্রতিবন্ধক শুধু তাই নয় বরং বিপদজনক ।অবৈধ রিলেশনশিপের ব্যাপকতা ,অশ্লীলতা-বেহায়াপনা,নব্য জাহেলিয়াতের এই যুগে নিজেকে কতক্ষণ ভাল রাখবেন???

বরং এই সময়ে যদি ভালবাসার প্রিয় মানুষটি(স্ত্রী,বউ,জীবনসঙ্গিনী) আপনার কাছে থাকে,তখন আপনি পাবেন একমুঠো পবিত্র ভালবাসার হৃদয়স্পর্শী মুহুর্ত।বিবাহিত স্ত্রী কাছে থাকলে বরং লাভই বেশি।আপনি হয়তো এখনো আমার সাথে একমত না,আর বেশিরভাগেরই না হওয়ার ই কথা।

★আরেকটা আইডিয়া শেয়ার করি- বিয়ে করলেন। আপনি থাকবেন আপনার জায়গায়। আপনার বউ তার বাপের বাড়িতে কিংবা তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।দুজনেই ব্যস্ত পড়ালেখা নিয়ে।স্বপ্নাতুর চোখে দেখছেন উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।নিজেদের মাঝে চ্যাটিং,ফোনালাপ,পারস্পারিক যোগাযোগ,খোঁজ খবর রাখা,উভয়ে উভয়ের পরিবারের সাথে কানেক্টিং থাকা,বিভিন্ন বন্ধে দেখা সাক্ষাৎ করা,এক সাথে ভ্রমণ,খাওয়া-দাওয়া করা,উপহার দেয়া,উদ্দীপনামূলক প্রতিযোগিতা,ঈদে বাসায় নিয়ে আসা,তার বাড়ীতে যাওয়া,সৎ পরামর্শ দেয়া, সুখ-দুঃখে অংশীদার হওয়া ইত্যাদি চলবে লেখাপড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
অত:পর আপনি দাঁড়ান আপনার নিজের পায়ে।বিয়ে করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোটা কোন প্রতিবন্ধকতাই নয়।
বরং ভাল ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বিশ্বস্ত সহযোগী।

★কি স্বপ্ন মনে হচ্ছে তাইনা?কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখেন, বর্তমানে প্রচলিত অবৈধ প্রেমের চেয়ে এইরকম নিষ্পাপ ভালোবাসা কি ভালো ছিলনা???বর্তমানে অবৈধ প্রেমের ফলগুলো কি হচ্ছে জানেন? ??
#ডাস্টবিন, ড্রেন, পথেঘাটে অপরিপক্ব নবজাতকের মৃতদেহ,আত্নহত্যা, খুন,ধর্ষন, বিবাহবিচ্ছেদ, পরকীয়া,দাম্পত্যকলহ ইত্যাদি ইত্যাদি।
ছাত্রাবস্থায় বিয়ে করতে চাইলে যে প্রশ্নটা করা হয় তা হলো-বিয়ে করে বউকে খাওয়াবে কি?আচ্ছা বউ কি রাক্ষসী নাকি শুধু খাবে আর খাবে???

★তবে হ্যাঁ এই রকম সিদ্ধান্তে ছেলে-মেয়েকে অবশ্যই পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সেক্রিফাইসের মনোভাব ও অত্যধিক উচ্চাবিলাসী মনোভাব পরিহার করতে হবে।

সমাজের দূষিত হাওয়ায় নিজেকে ভাসিয়ে দেয়ার অনেক উপাদানই আমাদের হাতের কাছে।স্কুল,কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গাতেই আজ নোংরামি আর ভন্ডামি মিলেমিশে একাকার। যারা নিজেকে এসব অনিয়ন্ত্রিত পথ থেকে হেফাজত করতে চায়,তাদেরকে তো সাধুবাদ জানানো দরকার।বিয়ের কথা বলার নির্লজ্জ্ব ভঙ্গিটা পাপ না,কিন্তু নির্লজ্জ্ব পথ তৈরি করে দেয়া,ঐ পথে হাটতে দেয়াটা পাপের।

#যেই_সমাজে বিয়ে কঠিন হয়ে যায় সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই অবৈধ প্রেম,ধর্ষন, যিনা-ব্যভিচার চরিত্রহীনতা বেড়ে যায়।যা আমাদের সমাজে বর্তমানে অহরহ ঘটছে।
একটা হাদীস শেয়ার না করে পারলাম না....

★আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেন, হে যুব সম্প্রদায় তোমাদের মধ্যে যে বিবাহের সামর্থ রাখে সে যেন বিয়ে করে নেয়, কেননা তা #চক্ষুকে_অবনত রাখে এবং #লজ্জাস্থানকে_হেফাযতে রাখে। -- বোখারী, মুসলিম)
সমাজ-ব্যবস্থার পরিবর্তন হোক।
অভিভাবকদের সুবুদ্ধি হোক.....
আল্লাহ আমাদেরকে নব্য জাহেলিয়াতের এই যুগে ঈমান নিয়ে বাঁচার তাওফিক দিন,আমীন

পঠিত : ১০৩৫ বার

মন্তব্য: ০