Alapon

রমজানে সুস্থতার জন্য কেমন খাবার জরুরী?

রমজান মাসের খাবার-দাবার অন্যান্য মাসের স্বাভাবিক খাবার-দাবার থেকে খুব ভিন্ন হওয়াটা উচিত নয়। আমাদের উচিত যতটা সম্ভব রোজার মাসে সাধারণ খাবার খাওয়া। যাতে করে আমাদের শরীরের ওজন খুব বেশি বেড়েও না যায়, আবার একেবারে কমেও না যায়।

সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন সুষম খাবারের। দরকার পরিমাণ মত শস্য জাতীয় খাবার, শাক সবজি, ফলমূল, দুধসহ মাছ, মাংস বা ডিম। রমজান মাসেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে সারা দিন রোজা রাখার পর খাবার নির্বাচনে ও গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। যেমন-

-দ্রুত হজম হয় এমন খাবারের পরিবর্তে বেছে নেয়া দরকার এমন খাবার যা হজম হতে বেশী সময় লাগে। এমন সব খাবার গ্রহণ করা যা হজম হতে প্রায় ৮ ঘন্টার মত সময় লাগে।
-খাবার নির্বাচনে দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে খাদ্যে আশেঁর উপস্থিতি। মূলত: যে সব খাবারে খাদ্য আঁশ বেশি থাকে সেসব খাবারই হজম হতে বেশি সময় লাগে।
-তৃতীয় বিষয়টি হলো, অধিক ভাজা পোড়া ও চর্বি যুক্ত খাবার পরিহার করা। কারণ ও ধরণের খাবারে বদ হজম, বুক জ্বালা পোড়া করা সহ শারীরিক ওজন বৃদ্ধি জনিত সমস্যা সৃষ্টির জন্য দায়ী।

-সর্বোশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পানি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করাটা প্রত্যেকের জন্য জরুরী।
-এছাড়া রমজানে সুস্থতা নিশ্চিত করতে ইফতারের ২ ঘণ্টা পর ১৫-২০ মিনিট হাটাহাটি করা ভালো। এবারে জেনে নেয়া যাক রমজানে কোন বেলায় কি খাবেন।

সেহেরীর খাবার
সেহেরীর সময় হচ্ছে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার, তাই এটি যেন কোন ভাবেই বাদ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদিও সারা দিনের ক্ষুধা সেহেরীর মাধ্যমে নিবারণ করা সম্ভব নয়, কিন্তু আমরা যদি খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু খেয়াল রাখি তাহলে অনায়াসেই ক্ষুধাকে বিলম্বিত করতে পারি। সেহেরীর খাবার নির্বাচনে নজর দিতে হবে আমিষ, জটিল শর্করা ও খাদ্য আঁশের প্রতি। সেহেরীতে যা খাওয়া ভালো আর তা হচ্ছে, লাল চালের ভাত এক থেকে দেড় কাপ, মিক্সড সবজি ১ কাপ, মাছ অথবা মুরগী ১ টুকরা, ডাল ১ কাপ সাথে দই অথবা ননী বিহীন দুধ ১ কাপ।

স্বাস্থ্য সম্মত ইফতার 
সারা দিন রোজা রাখার পর স্বাভাবিক ভাবেই রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। সেজন্য ইফতারের শুরুটা হওয়া দরকার কিছুটা দ্রুত হজম হয় এমন ধরণের শর্করা জাতীয় খাবার দিয়ে। এছাড়া আমাদের পরিপাকতন্ত্র দীর্ঘক্ষণ খাবার বিহীন অবস্থায় থাকার কারণে একে খাদ্য পরিপাকের জন্য প্রস্তুত করতে প্রয়োজন হয় যে কোন হালকা গরম তরল খাবার। সেই সাথে দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির।

ইফতারের সময়কার খাবার কে দুই ভাগে ভাগ করে খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। প্রথম ভাগ মাগরিবের নামাজের পূর্বে আর দ্বিতীয় ভাগ মাগরিবের নামাজের পর। একসাথে অধিক খাওয়া শরীরের নানাবিধ জটিলতা তৈরী করাসহ শরীরকে ক্লান্ত করে তুলতে পারে। ইফতারে যা খাওয়া ভালো- খেজুর ৩ থেকে ৪ টা, হালকা গরম ভেজিটেবল অথচা চিকেন স্যুপ ১ বাটি, ছোলা সিদ্ধ আধা বাটি, যে কোন ফলের জুস অথবা লাবাংগ ১ গ্লাস। মাগরিবের নামাজের পর পায়েস/দই চিড়া অথবা ওটস ১ বাটি, কলা অথবা আপেল ১ টা।

রাতের খাবার
রোজার মাসে রাতের খাবারটা কিছুটা হালকা হলে ভালো। খাবারে সব রকমের ফুড গ্রুফ থেকে কিছুটা রাখা দরকার। রাতের খাবারে ভাত ১ কাপ, মাছ অথবা মুরগী ১ টুকরো, সবজি ১ কাপ ও সালাদ ১ বাটি।

ইবাদতের জন্য সুস্থ থাকা অপরিহার্য। সুস্থতা হলো আল্লাহর নেয়ামত। আর সুস্থ থাকতে প্রয়োজন সুষম খাবার। তাই ইবাদতের মাসে চাই সুস্থ থাকা। আল্লাহ আমাদের কে সুস্থ থেকে ইবাদতের তাওফিক দান করুন।

পঠিত : ৬৯৬ বার

মন্তব্য: ০