Alapon

ছেলেটাকে দেখে মনে হল মুসলিম...

আজ বিকালে বড় ধরণের সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলাম, আলহামদুলিল্লাহ। ভুল ডিরেকশনে আসা এক মোটর বাইক সজোরে আমার চলমান সাইকেলে আঘাত করে, সামনের চাকা ধুমড়ে মুচড়ে গেলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে শারীরিকভাবে অক্ষত ছিলাম। প্রচন্ড ভয় পেয়েছি। ভাবলাম বাইকটা আমার পায়ে আঘাত হানতে পারতো অথবা আমি নিজেই নিচে পড়ে যেতে পারতাম, কিন্তু কিছুই হয়নি। দৈনন্দিন মাসনূন দুআ গুলো আসলেই আমাদের জন্য ঢালস্বরূপ, বাস্তবিক প্রমান পেলাম।

ভুলটা ছিল মোটর বাইক চালকের। চাইলে পুলিশ কল করে অভিযোগ জানাতে পারতাম, 'কেস ফাইল' করলে ভালো অংকের টাকাও পাওয়া যেতো, উন্নত বিশ্বে যেটা খুবই সাধারণ। শত শত এজেন্সী আছে, যারা এক্সিডেন্ট, ইনজুরি নিয়ে ডিল করে ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকে মোটা অংঙ্কের টাকা আদায় করে নিজেরা কিছু নেয় বাকিটা ক্লায়েন্টকে দেয়। সাদা চামড়ার লোকেরা এই ধরণের দুর্ঘটনাকে পুলিশ, মামলা লেভেলে নিয়ে যায় কোনো প্রকারের চিন্তা ছাড়াই, এদের আইনটাই এমন। আইনানুযায়ী বাইকারের ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে জরিমানা গুনতে হতো।

কিন্তু একজন মুসলিম হিসাবে আমার ভাবনাটা আলাদা। আমি জানি মোটর বাইকারের ভুল, কিন্তু সেটা যে সে ইচ্ছা করে করেছে তা নয়। হয়তো কেউ বলবে, আমার যদি আরো বড় ধরণের ক্ষতি হতো? বিষয়টা হলো, সব কিছুর ফায়সালা আসমান থেকে আসে। কি করলে কি হতো, যদি, কিন্তু, এসবের স্থান ইসলামে নেই। যেটা আমার জন্য নির্ধারিত সেটা আসবেই।

ছেলেটাকে বললাম আমি চাইলে পুলিশ কল করে, কেস ফাইল করতে পারতাম। ঈমানের আলো না থাকলে মানুষ অকৃতজ্ঞ ও বোধশক্তিহীন হয়ে যায়। আমি যে তার প্রতি দয়া দেখলাম সেটা সে মন থেকে মানতে নারাজ, যদিও যতবার আমি পুলিশ কল করার কথা বলছিলাম সে নার্ভাস ফীল করছিলো, তার গলা ধরে আসছিলো, যা আমার মনে দয়ার সঞ্চার করছিলো। নিজে গুনাহের মাঝে ডুবে থাকলেও যে কেউ একনজর দেখেই বুঝে নিবে আমি মুসলিম, বাইকারের ঔদ্ধত্য ভাব দেখেও নিজের জিদ চেপে রাখলাম, ভাবলাম ইসলামের শ্বাশত গুন্ 'ক্ষমা' প্রদর্শনের সুযোগটা যেন না হারাই, হয়তো সে কোনো অলস সময়ে তার বন্ধু মহলে এই ঘটনা আলোচনা করবে। যেহেতু আমার কোনো পরিচয়ই সে জানেনা, নাম ঠিকানা কিছুই জানা নেই, হয়তো সে গল্পটা এভাবে শুরু করবে,'ছেলেটা দেখে মনে হলো মুসলিম......'

পঠিত : ৬৬৬ বার

মন্তব্য: ০